এবিএনএ : চট্টগ্রামে এক আলোচনা সভায় ফ্লাইওভার নিয়ে মতবিরোধে বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আফসারুল আমীন।
ফ্লাইওভার নির্মাণের বিপক্ষে মত দিয়ে সাংসদের রোষে পড়েন এই মন্ত্রী; তার দিকে তেড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট সেমিনার কক্ষে ‘টেকসই জনবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এ চিত্র দেখা যায়।
বিতণ্ডার জের ধরে অবশ্য শেষ পর্যন্ত ওই আলোচনা সভা আর এগোয়নি।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম কেন্দ্রের আয়োজনে ওই আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। শুরুতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া ও নগর পরিকল্পনাবিদ আলী আশরাফ।
এরপর বক্তব্য দেন স্থপতি তসলিম উদ্দিন ও জেরিনা হোসেন। তাদের প্রায় সবাই ফ্লাইওভার নির্মাণের বিরুদ্ধে নিজেদের অভিমত তুলে ধরেন।
মন্ত্রী মোশাররফও তাদের বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, “যখন বহদ্দারহাট, কদমতলী ও মুরাদপুর ফ্লাইওভার হচ্ছে তখন আমি মন্ত্রী থাকলে হয়তো অনুৎসাহিত করতাম। করলেও আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতাম।
“কিছু ফি দিলেই চুয়েট-বুয়েট সমীক্ষা প্রতিবেদন দেয়। বহদ্দারহাট ও কদমতলী ফ্লাইওভারে তেমন গাড়ি ওঠে না। গাড়ি না উঠলে তো এক পর্যায়ে বিশ্বের অন্য দেশের মত ফ্লাইওভার ভেঙে ফেলতে হবে।”
প্রতিক্রিয়ায় সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আফসারুল আমীন বলেন, “মন্ত্রী না থাকলেও তখন আপনি এমপি ছিলেন। এর দায় দায়িত্ব আপনাকে নিতে হয়।”
এসময় মন্ত্রী জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলেও বক্তব্য চালিয়ে যান সাংসদ।
এরপর আফসারুল আমীন বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেছেন। পাবলিকলি এসব কথা (ফ্লাইওভারের বিরুদ্ধে) বলা উচিত না। ”
‘পূর্তমন্ত্রীর আগ্রহে গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আপনার (মন্ত্রী) আগ্রহে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সুভাষ বড়ুয়াকে দিয়ে আপনি এ পেপার (প্রবন্ধ) উপস্থাপন করেছেন।”
পাশে বসে থাকা মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন সাংসদকে উদ্দেশ করে বলতে থাকেন: “আপনাকেও তো ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছে।”
সঙ্গে সঙ্গে সাংসদ উত্তেজিত হয়ে চেয়ার থেকে উঠে মন্ত্রীর দিকে তেড়ে যান। এ অবস্থায় সাংসদকে শান্ত করতে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির ও চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমকে তার হাত চেপে ধরতে দেখা যায়।
মন্ত্রী-সাংসদের বিতণ্ডায় পুরো মিলনায়তনে হৈ চৈ শুরু হলে এক পর্যায়ে তা দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে হাতাহাতিতে রূপান্তরিত হয়।
পরে মোশাররফ হোসেন ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মিলনায়তন ছেড়ে চলে যেতে চাইলেও আফসারুলের অনুসারীদের বাধার মুখে তিনি বের হতে পারেননি।
এসময় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আফসারুল আমীনের অনুসারীদের স্লোগান দিতেও দেখা যায়।